প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা ঠাকুরগাঁওয়ে ভেঙে যাওয়া ব্রীজে ভোগান্তিতে ১২ টি গ্রামের হাজারো মানুষ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভেঙে যাওয়া ব্রীজে ভোগান্তিতে ১২ টি গ্রামের হাজারো মানুষ

601
0

ফিরোজ সুলতান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউৎনগর এলাকায় ১২টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কুলিক নদীর উপর নির্মান করা হয় ব্রীজ। কিন্তু উদ্বোধনের ১২ দিনের মাথায় ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়লেও দীর্ঘ ২৫ বছরেও সেটি পুন: নির্মান করা হয়নি। এ কারণে এ ব্রীজটি এলাকার মানুষের কাছে দূভোর্গের অন্যতম কারন হয়ে দাড়িয়েছে।

ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় নদীর দুই পাড়ের রসুলপুর, বর্ম্মপুর, বসতপুর, চাপর, বিরাশী, বদ্দখন্ড, গোগর, রানীভবানীপুর, লেহেম্বা ও কোচল গ্রামসহ ১২ টি গ্রামের মানুষকে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লেহেম্বা ও হোসেনগাঁও দুই ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে গেছে কুলিক নদী। এলাকাবাসীর তথ্যমতে ঐ দুই ইউনিয়নের সেঁতু বন্ধন হিসেবে ১৯৮৬-৮৭ খ্রিঃ ঠাকুরগাও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়নে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে দুই ইউনিয়নের এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পুরণ হলেও উদ্ভোধনের ১২ দিনের মাথায় ভেঙ্গে পড়ে সেটি ১৯৮৭ সালের ভয়াবহ বন্যার তীব্র স্রোতে ব্রীজটির দু-পাশের দু- অংশ দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে নিয়ে যায়। মধ্যখানে পড়ে থাকে অবশিষ্ট প্রায় ৩০-৪০ মিটার ব্রীজের অবশিষ্ট অংশ এবং বিছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তখন থেকেই জনবহুল ঐ দুই ইউনিয়নের মানুষ এ চরম দুর্ভোগের মোকাবেলা করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশও হয়েছে।

নদীতে ব্রীজ না থাকায় এলাকার মানুষকে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে রাউৎনগর ও কাঠালডাঙ্গী বাজারে যাতায়াত করতে হয়। অথচ ব্রীজটি থাকলে আধা কিলোমিটারের মধ্যে বাজারে যাতায়াত করতে পারতো তারা। এ অবস্থায় কৃষি উৎপাদিত পণ্য হাট বাজারে নিতে ট্রাক্টর ও ট্রলি পার করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নদী পাড় হতে অনেক সময় নদীতেই ট্রাক্টর হতে মালামাল পানিতে পড়ে যায়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রতি বার নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান ও এমপি প্রার্থীরা এ নদীর ব্রীজটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে ভোট নেওয়ার পর সব কিছু ভুলে যায় বিজয়ীরা। ফলে দীর্ঘ ২৫ বছরেও এ ব্রীজটি চলাচলের যোগ্য করা হয়নি। বিকল্প হিসাবে স্থানীয় কিছুসংখ্যক মানুষের প্রচেষ্টায় কাঠ ও বাঁশের সাঁকো তৈরী করে ঠেকা সাড়তে হচ্ছে তাদের এবং পারাপারে পথচারীদের দিতে হয় টাকা। কিন্তু বর্ষা মওসুমে পানির নিচে সাঁকোটি তলিয়ে যাওয়ায় পথচারীদের দূভোর্গের শেষ থাকেনা। নৌকা থাকলেও রাতের বেলা রোগিকে হাসপাতালে নিতে স্বজনদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। একই কারণে চিকিৎসকরাও যেতে চায় না সেসব এলাকায়।

হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব আলম জানান, এ ব্রীজটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করছি। আশা করি হয়ে যাবে।
রাণীশংকৈর উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, এ ব্রীজটির বিষয়ে বিভাগীয় উন্নয়ণ প্রকল্পে ধরে দেওয়া আছে। যেহেতু ১০০ মিটারেরও অধিক দৈর্ঘ্য তাই সেখানে টিম এসে মাপযোগ করে নিয়ে গেছে। তবে কখন হবে আমি তা বলতে পারবোনা।
এ ব্যপারে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেছি। কিছুদিন আগে ঐ অধিদপ্তরের লোকজন এসে মাপযোগ করে নিয়ে গেছে।