প্রচ্ছদ উপজেলার খবর যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে মরা গাছ এখন মরণফাঁদ

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে মরা গাছ এখন মরণফাঁদ

203
0

মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন,বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে মরা গাছ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। চরম ঝুঁকিতে রয়েছে শতবর্ষী অনেক গাছ। নেই কোন পাতা, শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। সমস্ত শাখা প্রশাখা গুলো আঁকড়ে ধরে আছে আগাছারা। প্রতিনিয়ত ভেঙে পড়ছে গাছ গুলো। এতে ঘটছে দূর্ঘটনা। সড়কের দুই পাশে দাড়িয়ে আছে ভয়ানক মৃত্যুদূত। সামান্য বাতাসে ভেঙে পড়ছে গাছ। সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। এসমস্ত জরাজীর্ণ গাছের ডাল যে কোন সময় মাথায় ভেঙে পড়তে পারে জেনেও জীবনের মায়া ত্যাগ করে সড়কে ছুটছে মানুষ। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। এ বন্দর থেকে প্রতিদিন শতশত পণ্যবাহি ট্রাক চলাচল করে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে। আন্তর্জাতিক চেকপোস্টও বেনাপোলে অবস্থিত। সকলের দাবী দ্রুত মরা গাছ অপসারণ করলে সড়কের দূর্ঘটনা কমে আসবে।

ঐতিহাসিক যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শতবর্ষী দুই হাজারের বেশি গাছ কেটে যশোর-বেনাপোল সড়ক সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এ সিদ্ধান্তের পর এসব গাছ রক্ষায় সরব হয়ে ওঠে দেশের সচেতন মহল ও পরিবেশবাদীরা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। শুরু হয় সড়কের দুই পাশে গাছ রেখে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। ফলে মহাসড়ক সংস্কারে ঝুঁকিতে পড়ে শতবর্ষী গাছগুলো। এ জন্য মহাসড়কের পাশের মাটি কেটে সাড়ে তিন ফুট গভীর করা হয়। এতে পাশের শতবর্ষী গাছের শিকড় কাটা পড়ে। গাছগুলো একটু ঝড়ে উপড়ে পড়ে ফসলী জমি সহ সড়কের পাশে অবস্থিত ঘর বাড়ির উপর। এ ঘটনার পর মহাসড়কের পাশে বসবাসকারী মানুষদের মধ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে সব সময়ই। আবারও ঝড়বৃষ্টিতে গাছ উপড়ে পড়তে পারে। এতে গাছের নিচে চাপা পড়ে মানুষের জানমালের ক্ষতি হতে পারে। তাই উপড়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা এবং যখন তখন ভেঙে পড়তে পারে এমন গাছগুলো অপসারণের দাবি সচেতন মহলের।সবার আগে সব খবর দেখতে কুয়াকাটা নিউজের সাথেই থাকুন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাছের গোড়া নড়বড়ে হয়ে যাওয়া সহ যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে শুকিয়ে যাওয়া এসব গাছ গুলো। সড়কের দুই ধারেই বিভিন্ন জায়গায় গাছ মরে শুকিয়ে গেছে। যখন তখন ভেঙে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে এসব গাছের জন্য। বিভিন্ন বাজার সংলগ্ন অনেকগুলো গাছের ডাল শুকিয়ে গেছে। যেকোনো সময় ডাল পড়ে পথচারী ও যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। শুকনো উঁচু গাছের কাণ্ডগুলো ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে। সড়কের ধারে থাকা মানুষেরা বলেন, বড় ধরনের ঝড়বৃষ্টি হলে গাছ আমাদের বাড়ির ওপরে পড়বে। যে কারণে পরিবার নিয়ে অত্যন্ত আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের দাবি জানান তারা। মানুষের প্রয়োজনে গাছ, কিন্তু গাছের প্রয়োজনে মানুষ আজ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণ করা দরকার। কিন্তু গাছ না কাটার ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশ আছে। এ কারণে মানুষের জীবন বাঁচাতে আমাদের যেন কিছুই করার নাই। আবার এই সমস্ত মৃত্যুদূত খ্যাত গাছ গুলো সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকাটা কিশের প্রয়োজন সেটাও জানা নাই সাধারণ মানুষের।

উল্লেখ্য : ইতিহাস থেকে জানা যায়, যশোরের জমিদার কালী পোদ্দার তার মাকে সোজা পথ দিয়ে গঙ্গাস্নানে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ৫৮ হাজার কড়ি ব্যয়ে ১৮৪২ সালে যশোর শহরের বকচর থেকে ভারতের নদিয়ার গঙ্গাঘাট পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। আর ৮০ কিলোমিটারের ওই রাস্তার ছায়ার জন্য দুই ধারে কালী পোদ্দার বিদেশ থেকে এনে অতিবর্ধনশীল রেইনট্রি গাছের চারা রোপণ করেছিলেন। সেই বৃক্ষগুলো যশোর-বেনাপোল সড়কে এখনো ছায়া দেয়ার পাশাপাশি অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু গাছগুলো আজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই আজ মানুষের প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সড়কে চলাচলরত সকল শ্রেনি পেশার মানুষ।