সাইদ সাজু, তানোর থেকে :
রাজশাহীর তানোরে কোল্ড ষ্টোরে পাইকারী ৩২ টাকা কেজি ও হাট-বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি। চলতি মৌসুমে হঠাৎ করে আলুর দাম আকাশ চুম্বিতে উঠেছে। সর্বকালের রেকর্ডে এবছরই আলু’র দাম সর্বচ্চ বেশী। ফলে আলু চাষে চাষীদের এবার ভাগ্যে’র পরিবর্তন ঘটেছে। এবছর আলু চাষ করে এনকেই কোটি টাকার মুখ দেখছেন।
করোনা মহামারীসহ দফায় দফায় বন্যার কারনে এবছর আলু’র দাম সর্বকালের সর্বচ্চ বেশী দাম পাচ্ছেন চাষীরা। ফলে, এবছর আলু চাষ করে অনেক চাষী কোটি টাকা মুখ দেখছেন।
গত কয়েক বছর ধরে আলু’র দাম উঠা-নামা করায় কোন বছর লোকসান হয়েছে আবার কোন কোন বেশী লাভ না হলেও লোকসান কাটিয়ে হঠেছেন। কৃষকদের কাংখিত দামের চেয়েও অনেক বেশী দাম পাওয়ায় কৃষকরা অন্য যেকোন বছরের সব ক্ষতি পুশিয়ে এবছর সফল হয়েছেন।
কিন্তু এবছর দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় কৃষকদের ভাগ্যে’র পরিবর্তন ঘটিয়েছে আলু। এবছর আলু চাষ করে অনেক চাষী কোটি টাকার মুখ দেখছেন। অন্যবছর গুলোতে আলু’র সর্বচ্চ দাম ছিলো ২০টাকা থেকে ২১টাকা কেজি, এবছর ৩২ টাকা থেকে ৩৩ টাকা। ফলে, এবছর আলু চাষীদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। গত কয়েক সপ্তাহ থেকে কোল্ড ষ্টোরগুলোতে পুরো দমে শুরু হয়েছে আলু কেনা-বেচা। রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আলু চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে তানোর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এবছর জমি থেকে শুরু করে হিমাগার ভাড়াসহ ১কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের সর্বচ্চ খরচ হয়েছে ১২টাকা থেকে ১৩টাকা। এক বিঘা জমিতে আলু’র ফলন হয়েছে সাড়ে ৪হাজার কেজি থেকে ৫হাজার কেজি। তানোর উপজেলায় যেসব চাষী ৫০ বিঘা থেকে ১শ’ বিঘা এবং তারও বেশী জমিতে আলু চাষ করেছেন এবছর তারা কোটি টাকার মুখ দেখছেন।
তানোর উপজেলার কোল্ড ষ্টোর গুলোতে বর্তমানে আলু পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩২টাকা থেকে ৩৩টাকা কেজি এবং হাট-বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫টাকা থেকে ৩৬টাকা কেজি।
অন্য বছর গুলোতে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা সর্বচ্চ ২২টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। যা অন্য যেকোন বছরের চেয়ে এবছর প্রতি কেজি আলুতে ১৪ টাকা থেকে ১৫টাকা অতিরিক্ত দাম পাচ্ছেন। এবছর আলুতে চাষীদের ডাবলেরও বেশি লাভ হচ্ছে।
তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির চিমনা গ্রামের প্রসিদ্ধ আলু চাষি লুৎফর রহমান বলেন, তিনি এ বছর ৫০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন এবং এসব আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা আছে। তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে প্রায় ৫হাজার কেজি এবং খরচ হয়েছে প্রতি কেজি ১৩ টাকা থেকে ১৪টাকা ওই আলু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩২টাকা থেকে ৩৩টাকা কেজি।
তিনি বলেন, আলু’র দাম সর্বকালের রেকর্ডে এবছর সর্বচ্চ বেশী, এবছর আলু চাষ করে অনেক চাষী কোটি টাকার মুখ দেখছেন। তিনি বলেন, করোনার মহামারীসহ দফায় দফায় বন্যার কারনে এবছর আলু’র দাম বেশী।