প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিকের উপরে উঠতে পারবে

বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিকের উপরে উঠতে পারবে

854
0

অনলাইন ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এ বছরের মাধ্যমিক স্তরের জেএসসি ও জেডিসি এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে আগেই। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও হচ্ছে না। এবার ঘোষণা এল মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষাও হবে না। পরীক্ষা ছাড়াই সব শিক্ষার্থী ওপরের ক্লাসে উঠবে।

বর্তমানে সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরে মোট শিক্ষার্থী এক কোটির কিছু বেশি। এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা বার্ষিক পরীক্ষা হবে কি না বা হলেও কবে হবে, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা না নেওয়ার ঘোষণা হলো। গতকাল বুধবার দুপুরে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

৩০ কর্মদিবসের ওপর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন। এর ভিত্তিতে ‘অ্যাসাইনমেন্টের’ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি মূল্যায়ন হবে।

অবশ্য নিজ নিজ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা কতটা শিখল বা ঘাটতি রয়েছে, তা মূল্যায়নের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ৩০ কর্মদিবসের ভিত্তিতে করা এই পাঠ্যসূচি অনুযায়ী আগামী মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেওয়া ও জমা নেওয়া হবে। অনলাইন বা অভিভাবকদের মাধ্যমে এই কাজটি করা হবে। পাঠ্যসূচিটি এখন ওয়েবসাইটে দেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কোনো প্রভাব ফেলবে না।

এনসিটিবির সূত্রমতে, প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোই পাঠ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। আবার যে বিষয়গুলো ওপরের শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ আছে, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমন ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা বিষয়ে কিছু গদ্য-কবিতা বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ, এ ধরনের গদ্য-কবিতার মাধ্যমে যে শিখনফল ফল অর্জনের কথা, তা সপ্তম শ্রেণিতেও শেখার সুযোগ আছে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘাটতি চিহ্নিত করে পরবর্তী ক্লাসে সেটি কতটুকু পূরণ হবে, তা নিয়ে তিনি সন্দিহান। বরং ঘাটতি নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে গেলে শিখনের ওপর প্রভাব পড়বে। সেটি পূরণ করতে গিয়ে শিক্ষকদের ওপরও চাপ বাড়বে। এ জন্য সবচেয়ে ভালো হতো আগামী কয়েক বছরের শিক্ষাবর্ষ পুনর্বিন্যাস করা।

মাধ্যমিকের পর এখন কেবল প্রাথমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত আটকে থাকল। অবশ্য প্রাথমিক স্তরেও পরীক্ষা বা মূল্যায়ন ছাড়াই এ বছর উত্তীর্ণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল-হোসেন গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেছেন, স্কুল না খুললে তো আর পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। অবশ্য গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নভেম্বরেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না।

তবে কিছু প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তরের জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা মূলত পাবলিক পরীক্ষা। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না হওয়ায় তাঁদের সনদে ফলাফল কী লেখা থাকবে বা বৃত্তির কী হবে—সে বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, পরবর্তী ক্লাসে কৃতকার্য হয়েছে বলেই উল্লেখ থাকবে। তবে সনদে কী থাকবে এবং বৃত্তির বিষয়ে কী হবে, সেগুলো ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।