প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা কে এই জুনায়েদ বাবুনগরী?

কে এই জুনায়েদ বাবুনগরী?

254
0

আব্দুল খালেক: নাম- মুহাম্মদ জুনায়েদ শওক। জুনায়েদ বাবুনগরী নামে বেশি পরিচিত।  তিনি ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

পারিবারিক জীবনে তিনি ৫ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। আরবি, উর্দু, ফার্সি ও বাংলায় তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশটি।

৫ বছর বয়সে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে ভর্তি হন। এখানে তিনি মক্তব, হেফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর ভর্তি হন দারুল উলুম মুইনুল ইসলাম হাটহাজারি মাদ্রাসায়। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারি মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

১৯৭৬ সালে পাকিস্তানের করাচির জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তাখাচ্ছুস ফিল উলুমুল হাদিস তথা উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন। এখন থেকেই তিনি হাদিসের সর্বোচ্চ সনদ লাভ করেন।

১৯৭৮ সালের শেষের দিকে তিনি দেশে এসে বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০০৩ সালে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারি মাদ্রাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি হাটহাজারি মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। ২০২০ সালের ১৭ জুন মাদ্রাসা কমিটি সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়।

পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ হাটহাজারি মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন বড় হতে থাকলে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে মাদ্রাসার দায়িত্ব মজলিসে শুরাকে দিয়ে দেন। পরবর্তীতে বাবুনগরীসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। তিনি মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস ও শিক্ষা সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।

২০১০ সালে তাকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির আমির শাহ আহমদ শফী মৃত্যুবরণের পর ১৫ নভেম্বর সংগঠনের একটি কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি আমির নির্বাচিত হন।

তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, দারুল উলুম হাটহাজারি মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরারি তালিমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লী, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৬৭ বছর বয়সে চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।