প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা রহনপুরে মসজিদে নামাজ পড়ে, বাজার করে ও আড্ডা দিয়ে এসে জানলেন তার...

রহনপুরে মসজিদে নামাজ পড়ে, বাজার করে ও আড্ডা দিয়ে এসে জানলেন তার করোনা পজিটিভ

171
0

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাগঞ্জ) প্রতিনিধি : বাশার (ছদ্ম নাম) পেশায় ব্যবসায়ী। বয়স ৩৫। গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরের বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরে শরীরে জ্বর আর শ্বাস কষ্ট অনুভব করায় গত ৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রহনপুরে করোনার এন্টিজেন্ট পরীক্ষা করান। সেখান থেকে ৫ মে তাকে ব্যবস্থপত্র দেয়া হয়, এন্টিজেন্ট পরীক্ষায় তার রেজাল্ট আসে নেগেটিভ।
স্বস্তি পেয়ে বাশার পরের দিন বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ব্যবসা করেন। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেন। মসজিদে গিয়ে নামাজ পরেন। কাঁচা বাজারে গিয়ে বাজার করেন। গত কয়েকদিন নিয়মিতই এসব করেছেন তিনি।
বিপত্তি বাঁধে গত ৮ মে থেকে। তার বাড়িত রহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। সেসময় বাশার বাইরে ছিলেন বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে। বাড়িতে তার স্ত্রীকে বাশারের করোনার পজিটিভের কথা বলা হয়। জানানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাশারের নমুনা রিয়াল টাইম পলিমারেস চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) পরীক্ষা করে করোনা পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গেছে। বাশারকে বাড়িতে থাকার ও চিকিৎসার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা। বাশার সেদিন থেকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনও শেষ হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। এখনো কিছু শর্তে লোকডাউন চলছে। এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে করোনা রোগীর এমন উদাসীন ও অপেশাদার আচরণ রহনপুরবাসীকে শংকায় ফেলেছে। এন্টিজেন্ট টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ রেজাল্ট নিয়ে করোনা রোগী ঘোরাফেরা বিষয়ে প্রশাসনের করণীয় কিছু আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
করোনা আক্রান্ত বাশার অপরাজেয় বাংলাকে জানান, তার শরীর খারাপ থাকায় গত ৫ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিজেন্ট টেস্ট করান। এটি নেগেটিভ এসেছিল। তাই তিনি বাইরে ছিলেন।তিনি জানতেননা পরে আবার রেজাল্ট পজিটিভ আসতে পারে। এসব বিষয়ে তার কোন ধারণা নেই। তাকে কেউ ধারণাও দেইনি। ৮ মে তিনি জানতে পারেন তার আসলে করোনা পজিটিভ। সেদিন রাত থেকেই তিনি বাড়িতে আছেন। সব কিছু মেনে চলছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাসান আলী এ বিষয়ে জানান, র্যা পিড এন্টিজেন্ট টেস্ট করে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধুমাত্র এন্টিজেন্ট পরীক্ষা করা হয়। এন্টেজেন্ট টেস্টে নেগেটিভ আসলেও পরে পিসিআর টেস্টে যে পজিটিভ আসবেনা এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। করোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য টেস্টটির নামই আরটি পিসিআর টেস্ট। বাশারের বেলাতেও এমন হয়েছে। তার এন্টিজেন্ট নেগিটিভি কিন্তু পিসিআর টেস্টে পজিটিভ এসেছে। তাই তাকে বাড়িতে বিধি নিষেধ মেনে থাকতে বলা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (ইউএচও) মাসুদ পারভেজ জানান, করোনার উপস্বর্গ থাকলেই রোগীকে বিধি নিষেধ মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা আছে। এন্টেজেন্ট টেস্টে নেগেটিভি আসলেই রোগীকে বাইরে ঘোরাফেরা করা একদম অনুচিৎ। মূল রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।