প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই হচ্ছে পশু জবাই

ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই হচ্ছে পশু জবাই

610
0
ফিরোজ সুলতান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ঠাকুরগাঁও জেলার সর্বত্র চলছে পশু জবাই। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের নির্দেশনা থাকার সত্তে¡ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া জবাই করা এসব পশুর মাংস বিক্রি হচ্ছে জেলার খোলা বাজার গুলোতে। আর এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে জেলার মানুষ।

জেলা শহরের কালিবাড়ি বাজার, গোধুলী বাজার, ঠাকুরগাঁও রোড বাজার, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড বাজার, আর্ট গ্যালারী, বিসিক মোড়সহ বিভিন্ন হাট বাজার গুলোতে একই দৃশ্যের দেখা মিলছে। এসব বাজার গুলোতেও কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই দেদারছে জবাই করা হচ্ছে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ।

২০ ডিসেম্বর রোববার সকালে সরেজমিনে জেলা সদরের একমাত্র কসাইখানায় গিয়ে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে মাংস তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কসাইরা। পশু জবাইয়ের রেজিস্টার খাতা দেখতে চাইলে তারা খাতাটি সরিয়ে ফেলে বলেন- খাতা দেখানোতে পৌর সচিব রাশেদুর রহমানের নিষেধ আছে। আজ কোন ডাক্তার পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন- সৈয়দ নামের এক পশু ডাক্তার নিয়মিত আসতেন কিন্তু তিনি তিন মাস আগে পা ভেঙে অসুস্থ্য হওয়ার পর আর আসেন না।

আর এতে করেই কোনপ্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলছে পশুর জবাই ও মাংস বিক্রি।

এর আগে এক সপ্তাহ আগের রেজিস্টার খাতায় দেখা যায়, বিগত ৩০ দিনের মধ্যে শুধুমাত্র দুই দিনের পশু জবাইয়ের তালিকা রেজিস্টার খাতায় রয়েছে। সেখানে সকাল ৭ টায় পশু ডাক্তারের সাক্ষর রয়েছে। তবে রেজিস্টার খাতায় সাক্ষরকারী ডাক্তারের নাম জানতে চাইলে এর সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে যেখানে তিন মাস যাবত ডাক্তার আসেন না সেখানে রেজিস্টার খাতায় কার সাক্ষর ? এর উত্তর জানতে চাইলেও পৌরসভার সচিব রাশেদুর রহমানকে দেখিয়ে দেন তারা ।

এ ব্যাপারে পৌরসভার সচিব রাশেদুর রহমান জানান, আমাদের পশু ডাক্তার নেই, আমরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। এ বিষয়ে আমি মেয়রের সাথে কথা বলেছি।

বিভিন্ন সময়ে জেলার বাজার গুলোতে অসুস্থ্য রোগা গরু ও ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ ওঠে। ভুক্তোভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বেশির ভাগ রোগাক্রান্ত কুকুর কামরানো পশু বিভিন্ন এলাকা থেকে কম দামে কিনে জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন কসাইরা। এগুলো রাতেই জবাই করে বিভিন্ন এলাকার পাইকারি মাংস বিক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেয় তারা।
পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেনের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে এ ব্যাপারে জেলার সিভিল সার্জন ড. মাহাফুজার রহমান সরকার বলেন, অসুস্থ্য গরুর মাংস খাওয়া অবশ্যই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে আমরা এসব পশুর মাংশ জব্দ করি এবং মাটিতে পুঁতে ফেলি। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জানানো হবে।