প্রচ্ছদ জেলার খবর ঠাকুরগাঁওয়ের চাল সংগ্রহে হ্রাস পাচ্ছে স্বাভাবিক মজুদ

ঠাকুরগাঁওয়ের চাল সংগ্রহে হ্রাস পাচ্ছে স্বাভাবিক মজুদ

571
0

ফিরোজ সুলতান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর জনপদ ঠাকুরগাঁও। দেশের মোট খাদ্য শস্যের একটা বড় অংশই উৎপাদিত হয় এখানে। তাই খাদ্য শস্য মজুদের দিক থেকেও এগিয়ে উত্তরের এ জেলা। কিন্তু চলতি বোরো মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে সফল হয়নি খাদ্য বিভাগের সরকারি ধান- চাল সংগ্রহ অভিযান ।

সরবরাহের চুক্তি করে শর্তভঙ্গ করেছেন ৮শ ৬০ জন চাল কল মালিক। জেলা খাদ্য অধিদপ্তরকে এক ছটাক পরিমান চালও দেয়নি তারা । তবে দায় এড়াতে যৎ সামান্য চাল দিয়েছেন ১শ ৩৪ হাস্কিং মিল মালিক ।

জেলা খাদ্য বিভাগের এবারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৩শ ৯ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২ হাজার ১শ ৩২ মেট্রিক টন । আর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার ৮শ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে ১৭ হাজার ৭শ ২২ মেট্রিক টন। ফলে এবার এ জেলায় সরকার ঘোষিত চাল সংগ্রহ পুরোপুরি অর্জিত হয়নি বলে জানায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ।

সূত্র জানিয়েছে, এ জেলায় ১ হাজার ৬শ ৬০টি অটো ও হাসকিং চাল কল রয়েছে । সব মিল মালিক বোরো মৌসুমে চাল সরবরাহ দেবে বলে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছিল । তবে তাদের মধ্যে ৮শ ৬০জন চুক্তি ভঙ্গ করেছে । কাজেই এ বছর বোরো মৌসুমে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি বলে জানান – জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহা. মনিরুল ইসলাম । তিনি আরো জানান , সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান চালের মূল্য বেশি থাকার কারনেই এ বিপর্যয় ঘটেছে। এছাড়াও জেলা খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে জেলার হরিপুর ও রাণীশংকৈল উপজেলায়ও এবার ধান-চাল সংগ্রহ হয়েছে কম পরিমানে ।

ঠাকুরগাঁওয়ে খাদ্য বিভাগের চাল সংগ্রহ অভিযান সফল না হওয়ার এটি একটি কারণ বলে দাবি করেন স্থানীয় নাগরিক কমিটির নেতা, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক ছাত্র মাহবুব আলম রুবেল।

অপরদিকে চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিক মকবুল হোসেন বলেন, প্রতিকেজি ৩৬ টাকা চাল ও ২৬টাকা মুল্যে ধান কেনার ঘোষনা দেয় সরকার । তবে সরকারি দরের চেয়ে বাজারে প্রতিকেজি চাল ৬-৭ টাকা বেশী ছিল। তাই লোকসান হবে জেনেই চুক্তি করার পরও শর্ত ভঙ্গ করেছেন মিলÑমালিকরা ।

তবে জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন , এ জেলার সব অটো মিলে চাল উৎপাদন হয় না । চুক্তি করা সত্তে¡ও সঠিক সময়ে চাল সরবরাহ করেনা তারা। পক্ষান্তরে বেশিরভাগ চাতাল ব্যবসায়ীদের কালার সর্টার না থাকায় অন্যের কারখানা গিয়ে চাল সর্টার করতে হয়। যা যথেষ্ট ব্যয় বহুল। তাই
হাসকিং মিল মালিকরা সরকার কে চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ।
তবে যেসব রাইস মিলের সঙ্গে খাদ্য বিভাগের চুক্তি এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়ভাবে এ ব্যাপারে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ।