এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান, মেম্বার ও জনপ্রতিনিধি গা ঢাকা দিয়েছেন, এতে প্রতিটি ইউনিয়নের জনসাধারণ তাদের প্রয়োজনীয় সরকারি সেবা গ্রহন করতে গেলে পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবদ্ধ দেখতে পান, খোজ নিয়ে জানা যায় এ সকল চেয়ারম্যান, মেম্বারগন আওয়ামীগ সমর্থিত হওয়ায় তারা আপাতত গাঢাকা দিয়েছেন,দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও গাঢাকা দিয়েছেন। হামলা-মামলার ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন । তবে কোন কোন চেয়ারম্যান এলাকায় নিরাপদ স্থানে বসে পরিষদের দৈনন্দিন কাজ সারছেন, অনেক ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যোক্তরা উপস্থিত হয়ে কাজ করলেও চেয়ারম্যান,মেম্বারদের সাক্ষরের জন্য ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সেবাপ্রত্যাশীদের।
ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স করতে আসা কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানায় (৫ আগস্ট) হঠাৎ শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পরে তার দল সমর্থিত চেয়ারম্যান, মেম্বারগনদের এলাকায় খুজে পাওয়া যাচ্ছে না, এভাবে চললে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হবে, জনসাধারণের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।
তবে উপজেলার বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা বলছেন, ‘বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও ব্যতিক্রম মোরেলগঞ্জ উপজেলা। এলাকার শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। তাই এখনো কোনো দলের নেতাকর্মী বা কোনো সমর্থক আক্রান্ত হননি। এর পরও আওয়ামীপন্থী জনপ্রতিনিধিরা কেন গাঢাকা দিয়েছেন, তা আমাদের জানা নেই।
এ ব্যাপারে কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে তারা জানান, তারা সরকারের প্রতিনিধি,আওয়ামীলীগ ক্ষমতা হারানোর পরে তারা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে,তারা সেনাবাহিনীর সহ প্রশাসনের সহযোগীতা চান।
এ ব্যাপারে স্হানীয় সরকার বিভাগের বাগেরহাট জেলার উপ-পরিচালক জানান,জনসাধারণের সাময়িক এই অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত, তবে খুব শীগ্রই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।মোরেলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ৫ আগস্টের আগ থেকেই তার বাড়িতে রয়েছেন।
এদিকে বুধবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই বিকল্প পদ্ধতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
পত্রে বলা হয়, যেহেতু উপজেলা পরিষদের অনেক প্যানেল চেয়ারম্যানগণও কর্মস্থলে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করেও উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়। যেহেতু এ পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদসমূহের অনেক ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেহেতু যে সকল উপজেলা পরিষদসমূহে এরূপ পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে, সে সকল উপজেলা পরিষদসমূহের সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার নিমিত্ত প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে পুনরাদেশ না পাওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।