বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি :

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে চারটি আসন বহালের দাবিতে জেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। আসন ফিরে পিতে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে। এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম উৎসব দুর্গা পূজা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখে হরতাল কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন। ঘিরে রাখেন নির্বাচন অফিসের প্রধান গেট। এ সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।

এদিকে জেলায় চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দুটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। বাগেরহাট প্রেসক্লাব ও জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মাদ জাকির হোসেন একটি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল পৃথক দুটি রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। রিট পিটিশনে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।

সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কো-কনভেনর ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম উৎসব দুর্গা পূজা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থের বিষয়টি চিন্তা করে আমরা হরতালের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আমরা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করেছি। দুপুর পর্যন্ত নির্বাচন অফিস ঘেরাও থাকবে। বুধবারও একইভাবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নির্বাচন অফিস ঘেরাও থাকবে।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, বাগেরহাট জেলা শাখার সেক্রেটারি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি সদস্য সচিব শেখ মোহাম্মাদ ইউনুস বলেন, ইতোমধ্যে দুটি রিট হয়েছে। আরও রিটের প্রস্তুতি চলছে। আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন নেতাকর্মীরা। এরপরও ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। নির্বাচন কমিশনের এই আসন বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে বলে জানান সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে সড়ক অবরোধ, হরতালসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। সর্বশেষ মঙ্গল ও বুধবার হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় তারা।