মিজানুর রহমান জুয়েল, ঢাকা:  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাতের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল। তাঁর পথ ধরেই শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শান্ত, ওয়াসিমসহ অসংখ্য তরুণ ও যুবক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। অবশেষে চব্বিশের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাতের স্বার্থকতা এই বাংলাদেশ খুঁজে পেয়েছে।”

তিনি আজ (৭অক্টোবর, মঙ্গলবার) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত “শহীদ আবরার ফাহাদ স্মরণে সিম্পোজিয়াম”-এ প্রধান আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন শাখা সেক্রেটারি মোজাম্মেল হোসাইন আবির।

কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন, “ইসলাম চর্চা করা এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অপরাধেই শহীদ আবরার ফাহাদকে ‘শিবির’ ট্যাগ দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু আবরার ফাহাদ একা নন; এদেশে এমন হাজারো শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শুধুমাত্র প্র্যাক্টিসিং মুসলিম হওয়ার অপরাধে। যে শিক্ষার্থী নামাজ পড়ে, ইসলামী জীবনাচারে বিশ্বাসী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতো, তাকেও ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি, নির্যাতন, এমনকি হত্যাচেষ্টার শিকার হতে হয়েছে।”

তিনি বলেন, “২০১৮ সালে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সিরাজুল ইসলাম একাডেমিক কাজে বুয়েটে গেলে তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। আবরার ফাহাদ তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে কী ভয়ঙ্কর হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা ও অন্যায়ের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই অন্যায়ের পেছনে কেবল কিছু শিক্ষার্থী নয়; বরং ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কিছু শিক্ষকও সেই অন্যায়কে বৈধতা দিয়েছেন।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আজও কিছু মহল আবরার ফাহাদের শাহাদাতকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁকে ‘গুপ্ত শিবির’ বানানোর কুপ্রয়াস চলছে; আবারও ছাত্রশিবিরকে হত্যাযোগ্য করে তোলার ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে এমন অপচেষ্টা আর মেনে নেবে না এদেশের মানুষ।”