৪২ বছর যাবত একই পেশায় গোদাগাড়ীর জিল্লুর রহমান । দুধ বেচা কেনার কাজে ব্যাহত সাইকেলটি অতি জরাজীর্ণ ।
সাইফুল ইসলাম (গোদাগাড়ী) রাজশাহী । জীবন জীবিকাকার তাগিদে অনেকেই মাঝে মধ্যে পেশা বদল করে থাকে, এটা করলে হয়তো ভালো থাকা যাবে, ওটা করলে হয়তো প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হওয়া যাবে। এসব মানুষগুলোর মধ্যে এমনই একজন মানুষ, যার মধ্যে নেই কোন লোভ লালসা। তিনি হলেন গোদাগাড়ী উপজেলার চাপাল দোতরাবোনা গ্রামের মৃত্যু কফিলুদ্দিনের ছেলে জিল্লুর রহমান। (৭২) যিনি ৪২ বছর যাবত একই পেশায় রয়েছেন। সম্প্রতি ৭২ বয়সী এই জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের এক আলাপ কালে তিনি জানান ১৯৫২ সালে জন্ম এই জিল্লুর রহমানের জন্মের ৫ বছর বয়সে মাতা পরলোক গমন করেন, ১০ বছর বয়সে বাবা পরলোক গমন করেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে জিল্লুর রহমান ছোট। বাবা মা মারা যাওয়ার পরে, বিভিন্ন সমস্যা সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে উঠতে হয় তাকে।আনুমানিক ২৪ বছর বয়সে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। এরপর অন্তত ছয় বছর অন্যের জমিতে কাম লা দিয়ে চালাতে হয় সংসার জিল্লুর রহমানকে। এরই মধ্যে ধার দেনা করে একটি সাইকেল ওদুইটি টিনের ঢোব কিনেন জিল্লুর রহমান তখন ১৯৮৬সাল শুরু করেন দুধ কেনা বেচার ব্যবসা । সে সময় দুধের কেজি ছিল ২টাকা ৫০ পয়সা । ওই সময় জিল্লুর রহমান প্রতিদিন ১৫ /২০ কিলো সাইকেল যোগে বাসা বাড়িতে গিয়ে দুধ সংগ্রহ করে, বাসায় নিয়ে এসে, ছানা তৈরি করে গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁয় ছানা বিক্রি করেছেন। কিন্তু বর্তমানে ৭২ বয়সী জিল্লুর রহমান বয়সের ভারে ছানা তৈরীর ঝামেলা এড়িয়ে গিয়ে স্থানীয় একটি দুধের কারখানায় পাইকারি দরে দুর বিক্রি করছেন জিল্লুর রহমান। তিনি আরো জানান এ পেশায় মুক্ত হওয়া তার ৪২বছর চলছে, এ পেশা থেকে আয় করে, ৫ কাঠা ভিটেমাটি কিনেছেন, ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ করে ৩ ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। করেছেন আধাপাকা বাড়ি, বাড়িতে আছি কয়েকটি গৃহপালিত পশু।সব মিলিয়ে কোনরকমে চলে যাচ্ছে স্বামী স্ত্রীর সংসার। অবশেষে এই প্রতিবেদকের নিকট দাবি করেন ৪২ বছর ধরে একই পেশা ধরে রাখার স্মৃতিস্বরূপ হিসাবে দুধ কেনা বেচা কাজে ব্যবহার করার জন্য অত্যাধুনিক মডেলের একটি ভ্যান গাড়ি কেউ তাকে সরবরাহ করতো।এতে করে তার খুব উপকার হত। জিল্লুর রহমান আরো বলেন তিনি যতদিন বেঁচে থাকবে এই দুধ বেচা কেনার পেশার সাথেই যুক্ত থাকবেন বলে অভি মত তার।