প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা ভোলাহাটে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবন বই-পাঠক শূন্য ; অন্যকাজে ব্যবহৃত 

ভোলাহাটে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবন বই-পাঠক শূন্য ; অন্যকাজে ব্যবহৃত 

347
0
বি.এম রুবেল আহমেদঃ উপজেলা পরিষদ চত্বর দক্ষিণ গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই ডান দিকে সম্মুন্নত স্মৃতি  সৌধ। তার পাশেই রয়েছে দৃষ্টি নন্দন ভোলাহাট কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবন। ২০১১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের কয়েক লক্ষ  টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয় ভোলাহাট উপজেলা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবনটি। নির্মাণাধীন লাইব্রেরী  ভবন উদ্বোধন করেন ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য মু.জিয়াউর রহমান। লাইব্রেরী  উদ্বোধনকালে পাঠকের জন্য চেয়ার-টেবিল, আলমারী থাকলেও উদ্বোধনের দিন থেকে আজ পর্যন্ত কোন বই না থাকায় এ লাইব্রেরীর কোন পাঠক নেই।
 চত্বরের পাশে ভবনের গায়ে জলজল করে লেখা ভোলাহাট কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী। দীর্ঘদিন ধরে সৌন্দর্য্যের চাদরে ঢাকা  ভবনটি দাঁড়িয়ে থাকলেও উপজেলার দায়িত্বশীলদের কারো কোন দিন চোখেই পড়েনি এটি পাঠাগার না অন্য কোন ভবন। সারা দেশে জ্ঞান বিলিয়ে দিতে সরকার যখন ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরী নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
ভবনের ভিতর ই-সেবা দেওয়া শহীদুল ইসলাম তিনি বলেন, ২০১১ সাল ভবন উদ্বোধনের সময় থেকে  থেকে লাইব্রেরী ভবনে উপজেলা ই-সেবা দিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, উপজেলা কেন্দ্রীয় পাঠাগার হলেও চেয়ার-টেবিল, একটা আলমারী আছে কিন্তু কোন বই দেখতে পায়নি বলে জানান। তিনি আরো বলেন, লাইব্রেরী  ভবনটি উদ্বোধন থেকে এখন পর্যন্ত আমি দেখা-শুনা করি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার এস এম মিজানুর রহমান জানান, ভোলাহাটে কেন্দ্রীয় পাঠাগার কোথায় আছে তা আমার জানা নাই। উপজেলা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী থাকলে তো লাইব্রেরি কমিটি থাকার কথা। কিন্তু এমন তথ্য আমার কাছে নাই বলে জানান। তিনি আরো বলেন, উপজেলায় আমার মোট ৪৭টি স্কুল রয়েছে। সব স্কুলে বঙ্গবন্ধু কর্ণার রয়েছে। সেখান থেকে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পারে। ঠিক তেমনী ভোলাহাট উপজেলা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী থাকলে মুক্তিযুদ্ধের বই, বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা বই, ইসলামী বই, মনিষিদের লেখা বই, কবিতা-গল্প, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষি, মৎস্য, সফলতা অর্জন বই, গবেষণা, পত্রিকাসহ বিভিন্ন বই রাখলে খুব ভালো হবে। বই পত্রিকা থাকলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাইব্রেরীতে  গিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। পাঠগার চালু করার জোর দাবী করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কাউসার আলম সরকার জানান, আমিও লাইব্রেরীর  ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে ভবন যেহেতু আছে সেহেতু চালু করার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে শেখ মেহেদী ইসলাম (ভূমি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) থাকার সময়  বলেন, উপজেলা কেন্দ্রী পাঠাগার ভবন আছে কি না আমিও জানি না। তবে লাইব্রেরী  থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। লাইব্রেরী চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালের সাথে মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা দিয়েও  সারা মেলিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ রাব্বুল হোসেন বলেন, উপজেলা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী আছে কি না তাঁর জানা নেই। তবে ভবন আছে সেটি উপজেলা ই-সেবার উদ্যোক্তা শহীদুলের ভবন বলে জানি বলে জানান। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী বলে তিনি জানেন না।লাইব্রেরী  কমিটি আছে হয়েছিলো এমন সন্দেহ মূলক কথা বললেও কে বা কারা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা সদস্য তা জানাতে পারেননি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবেন বলে জানান। উপজেলার অন্যতম অরাজনৈতিক সংগঠন ভোলাহাট স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনর অস্থায়ী কার্যালয়ের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তৎকালীন সাংসদ মুঃ জিয়াউর রহমান। কিন্তু সেটারও কোন হদিস পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষানুরাগী সহ সকল মহলের দাবি যতটা দ্রুত সম্ভব লাইব্রেরী ভবনটি যেন যথাযথ ব্যবহার হয়।