সাইফুল ইসলাম, রাজশাহী :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে বরাদ্দকৃত ৮৮ বস্তা সরকারি চাল পাচারকালে জব্দ করেছে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন।
২০ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে চালগুলো জব্দ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহাম্মেদ।
এ সময় ভিজিএফের ২ হাজার ৬৩২ কেজি চাউল গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে পাচার করা হচ্ছিল।
২০ মার্চ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদএর দিকনির্দেশনায় উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অভিযানপরিচালনা করে অসহায় ও দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল জব্দ করেন। এ সময় । চাল পাচারের অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতারণ চলছিল। এলাকার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ওই চালগুলো কেনার জন্য কয়েকজন লোককে নিয়োগ করেন।
ঈদ উপলক্ষে গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে চাল বিতরণের লক্ষে গোগ্রাম ইউনিয়নের জন্য ২৪ মেট্রিক টন বস্তা চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় । এই পরিমাণ চাল ২ হাজার ৩৮০ জন দুঃস্থ ও গরিব মানুষের মাঝে বিতরণের কথা ছিল।
বুধবার ১৯ মার্চ ১ দফা কিছু চাল বিতরণ করা হয় এবং বৃহস্পতিবার২০মার্চ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ চাল বিতরণ দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভ্যানে যোগে চাল পাচারের সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) ফোন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২ হাজার ৬৩১ কেজি চাল জব্দ করেন।
ইউএনও’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোগ্রাম ইউনিয়নের ধাতমা গ্রামের একটি সড়ক থেকে ২৯ বস্তা, ধাতমা খাড়ি ব্রিজের কাছ থেকে ১৭ বস্তা, গোগ্রাম হাটপাড়ার মুকতাদিরের বাড়ি থেকে ৮ বস্তা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৮৫টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। এসময় চাল পাচারকালে তেরোপাড়া গ্রামের আসাদুল ও উচ্ছড়াকান্দি গ্রামের মাইনুলকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, ২০মার্চ বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আটক অভিযান চালানো হয়। এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের ১ জন কর্মচারী বাদী হয়ে রাজশাহী গোদাগাড়ী মডেল থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম মমিনুল হক জানান, পাচার হওয়া চাল ক্রয়ের অভিযোগে ২ জনকে ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেতদন্ত-পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্থানীয়রা জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান কারাগারে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আসলাম আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থ ও গরিব মানুষদের মাঝে বরাদ্দকৃত বিশেষ ভিজিএফ চালের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। যাদেরকে চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই সচ্ছল ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী। এই চক্রটি চাল তুলে পরিষদেই বিক্রি করে দিয়েছেন।
স্থানীয়র আরো জানান এর আগেও গোগ্রাম ইউপিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলীর মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনিফোনটি ধরেননি তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।