প্রচ্ছদ অন্যান্য পৃষ্ঠা তানোরে মুন্ডমালা হাটে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি

তানোরে মুন্ডমালা হাটে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি

530
0

তানোর প্রতিনিধি : তানোরে কোটি টাকায় ইজারা দেয়া মুন্ডমালা হাটে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ফলে, কাঁদা-পানি, ময়লা-আবড়র্জনায় আর দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। মুখে উন্নয়নের ফুলঝুরি ফুটালেও রহস্যজনক কারনে পৌর কর্তৃপক্ষ হাটরে উন্নয়ন করতে চরম উদাসীন।

মুন্ডমালা হাট নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের ভুমিকার বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। মুন্ডমালা হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, প্রতিবছর এই হাট ১ কোটি টাকারও বেশী মুল্যে ইজারা দেয়া হলেও হাট ও বাজারের উন্নয়নে পৌর কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

এলাকাবাসী, মুন্ডমালা হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, মুন্ডমালা হাটকে ঘিরেই ১৪ই ডিসেম্বর/২০০২সালে মুন্ডমালা পৌরসভা গঠন করা হয়। প্রায় ১৮বছর ধরে পৌর কর্তৃপক্ষ মুন্ডমালা হাট ইজারা দিয়ে আসছেন। কিন্তু হাটের কোন উন্নয়ন করাতো দুরের কথা ময়লা আবড়র্জনাও তেমন ভাবে পরিস্কার করা হয়না।

মুন্ডমালা হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা ও প্রত্যক্ষদর্শিরা বলছেন, বাধাইড় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পশ্চিম পার্শ্বে ও সামনের ফাঁকা জায়গায় দীর্ঘদিন থেকেই প্রচন্ড ভীড় ও ঠেলা-ঠেলি করে বর্ষা মৌসুমে মুন্ডমালা পশুহাটে হাটু পরিমান কাঁদার মধ্যেই গরু-ছাগল বেচা-কেনা করা হয়। পশু হাটের চার পার্শে¦র বিভিন্ন স্থানে ময়লা ও আবড়র্জনায় চরম দুর্গন্ধের মধ্যেই চলে পশু বেচা কেনা। পৌর কর্তৃপক্ষ ওই আবড়র্জনা ও ময়লা দীর্ঘদিনেও সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেন।

অপর দিকে মুন্ডমালা হাটের মাছ বাজারের টিনসেটর টিন ভেঙ্গে পাওয়ায় বৃষ্টির পানির মধ্যেই চলে বেচা কেনা, কাঁচা বাজারে প্রতিদিন খাজনা আদায় করা হলেও বাজারের ভিতরের ড্রেন পরিস্কার না করায় পচাঁ কাঁদার চরম দুর্গন্ধের মধ্যেই চলছে বেচা কেনা। কাঁচা বাজারের পার্শে¦ই পূর্ব নিকের ময়লা আবড়র্জনা দীর্ঘদিন থেকে সরিয়ে না নেয়ায় সেখানে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। যার পরিবেশ মানব জীবনের জন্য মারাত্তক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ (১৫ই সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সরেজমিন মুন্ডমালা হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটের বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবড়র্জনা ও ড্রেনের পচাঁ কাঁদার চরম দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাধাইড় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে ও পেছনে কাঁদা ও ময়লা আবড়র্জনার স্তুপ।

সেখানে দীর্ঘদিন থেকেই এভাবেই পড়ে আছে দুর্গন্ধময় পঁচা ময়লার স্তুপ, মুন্ডমালা মার্কেটের দক্ষিনের পুকুরের পুরোটাতেই পলিথিন ও কাগজ পত্র ময়লা আবড়র্জনায় পানিতে পঁচে ভেসে আছে এবং চরম দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মুন্ডমালা তিন মাথার মোড়ের দক্ষিনের রেষ্টুরেন্ট গুলো পেছনে পঁচা কাঁদা ও আবড়র্জনার স্তুপের গন্ধের মধ্যেই চলছে খাবার তৈরি। সেখানে এতটাই দুর্গন্ধ যে একজন সুস্থ্য মানুষ সেখানে যেতে পারবেন না।

মুন্ডমালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিনের দেয়াল ঘেষে জমা হয়ে আছে ময়লা ও আবড়র্জনা যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমিক। এভাবেই মুন্ডমালা হাটের বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবড়র্জনা ও পঁচা কাঁদার স্তুপ দর্ঘিদিন থেকে জমে থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এসব ময়লা আবড়র্জনা অপসারণ করেন না।

সেই সাথে হাটের ভিতরে চলাচলের পথগুলোর ইট ভাংগা চুরা এবং যেখানে সেখানে ময়লা আবড়র্জনার স্তুপ ও পঁচা দুর্গন্ধের মধ্যেই ক্রেতা বিক্রোতারা তাদের কেনা কাটা করছেন। হাটের ভিতরের গনসৌচাগারটির অবস্থাও খুবই অস্বাস্থ্যকর। ফলে, হাটের ভিতরের অলিগলিতের ফাঁকা জায়গায় অনেকেই প্রকৃতির কাজও সেরে নেয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে। দীর্ঘদিন থেকে মুন্ডমালা হাটে অসাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই চরম দুর্ভোগ ও ক্ষোভ নিয়ে হাটে কেনা কাটা ও প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সারতে হচ্ছে।

মুন্ডমালা হাটের ভিতরের এক চায়ের দোকানী নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেন, কোটি টাকা মুল্যে ইজারা দেয়া এই হাটের বিভিন্ন স্থানেই পঁচা দুর্গন্ধময় ময়লা আবড়র্জনার স্তুপ রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ এগুলো সরায়না। তিনি উন্মুক্ত হয়ে থাকা ড্রেনের পঁচা কাঁদা ও ময়লা দেখিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন লাভ হয়না এবং এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন হয়রানির স্বীকার হতে হয়। তিনি আরো বলেন আমার নাম প্রকাশ করলে আমিও নানা রকম হয়রানি স্বীকার হতে হবে।

মুন্ডমালা তিন মাথার মোড়ের রেষ্টুরেন্টে খাবার ক্ষেতে আসা একব্যাক্তি বলেন, কি করবো, এভাবেই যতদিন বাচা যায় বাচতে হবে, প্রতিবাদ করা বা কোথাও কোন অভিযোগ করা যাবেনা। নাম প্রকাশে রেষ্টুরেন্ট মালিক বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন থেকে ময়লা আবড়র্জনা অপসারণ না করায় এবং পানি নিস্কাসনের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে জমে থাকা ময়লা আবড়র্জনা পঁচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে।
এনিয়ে মুন্ডমালা পৌর সভার সচিব আবুল হোসেন সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান এবং কোন কথা বলেননি।

এবিষয়ে যোগাযোগের জন্য মুন্ডমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানীর মোবাইলে একাধীকবার ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। #