সাইফুল ইসলাম গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহী পদ্মা নদী থেকে উত্তরে বেরিয়ে গেছে বাগতির বিল। খালের মতো সে বিলের ওপর পাল্লা ছাড়া জানালার মতো দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। সেতুটি পুনঃনির্মাণ করতে ওপরের ছাদ খুলে ফেলা হয়েছে। শুধু দাঁড়িয়ে আছে পিলারগুলো। পিলারের ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন ৫টি গ্রামের মানুষ। কিন্তু যানবাহন পারাপারের উপায় নেই। এতে পাঁচটি গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সেতুটি রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের গহমাবোনা শরিফুলের মোড় এলাকায়।

এ এলাকাটি পবা উপজেলার একেবারে পশ্চিমপ্রান্তে অবস্থিত। এখাান গোদাগাড়ী উপজেলা শুরু। ছোট এই সেতুটিই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গোদাগাড়ীর খরচাকা সীমান্ত ফাঁড়ির চলাচলের পথ। খরচাকা ছাড়াও সেতুটির ওপর দিয়ে গোদাগাড়ীর বিয়ানাবোনা, ও নীলবোনা, এবং পবার গহমাবোনা, ও বাগানপাড়া , গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। ওই এলাকায় সরে জমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৫০ থেকে ৫৫ ফুট। আর প্রস্থ ৮ /৯/ ফুট। আনুমানিক ২০ ফুট গভীর খালের ওপর সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। সেতুর ওপরে কোন ছাদের কার্পেটিং না থাকাই,সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুউপযোগীহয়ে পড়েছে । সেতুর ২ পাশের বিমের ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ছোট, বড়, দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান গ্রামবাসীরা । গ্রামবাসীরা আরো জানান, অন্তত ৩০ বছর পূর্বে এই সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল। পরে এর কোন সংস্কার হয়নি। কয়েকমাস আগে সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। এরপর ঠিকাদারের লোকজন সেতুটি ভাঙতে শুরু করে। সেতুর ওপরের ছাদ ও কার্পেটিং অপসারণের পর ঠিকাদারের লোকজন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. এসাদুল জানান, ‘সেতুটি ভাঙার কারণে মানুষের দুর্ভোগ না হয় তার জন্য পাশে একটি বাঁশের সেতু করা হয়েছে। অনেকে সেতুর বিমের ওপর দিয়েও চলাচল করছেন। কিন্তু গাড়িঘোড়া চলতে পারছে না। সরকারি কাজ করতে গেলে এ রকম একটু দুর্ভোগ হয়। কবে কাজ শেষ হবে, আমরা সে অপেক্ষা করছি।’ সেতুর পাশেই শরিফুল ইসলামের নামের মুদি দোকান। তিনি জানান, এই সেতুর ওপর দিয়ে অন্তত পাঁচটি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। সেতুর ছাদ খুলে দেওয়ার কারণে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বয়জসথরা বাঁশের সেতু দিয়ে চলতে করতে পারে না। তারা সেতুর বিমের ওপর দিয়েই চলাচল করে। নীলবোনা গ্রামের ইজিবাইক চালক সাদ্দাম হোসেন জানান, আগে তিনি এই সেতুর ওপর দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে বাড়িথেকে শহরে যাতায়াত করতেন। এখন তাকে ৪ /৫/কিলো:ঘুরে বাড়ি যাওয়া-আসা করতে হয়। বাড়ি থেকে কোন মালামাল আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি গ্রামের মানুষকেই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। । যোগাযোগ করা হলে এলজিইডির পবা উপজেলা প্রকৌশলী মকবুল হোসেন জানান, ‘এই সেতুটা ভেঙে প্রায় এক কোটি টাকায় নতুন সেতু নির্মাণের ঠিকাদার নির্বাচনও হয়ে গেছে। ঠিকাদার সেতু ভাঙার কাজ শুরুও করেছিলেন। কিন্তু পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে খাল দিয়ে বাগতির বিলে পানি ঢুকে গেছে। পদ্মায় পানি কমলে আবার খাল দিয়েই বিলের পানি নেমে যাবে। পানি নেমে যাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।’