জিখবর ডেস্ক:
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে কিছু না বলে দিল্লী চলে যান। এতে দেশে থাকা হেভিওয়েট নেতা থেকে শুরু করে পাতি নেতা পর্যন্ত সকলেই গা ঢাকা দিয়েছেন। যে সব নেতা মানুষের কাছাকাছি ছিল আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাননি তারা ৫/৭দিন গা ঢাকা দেয়ার পর জনসম্মুখে আসতে শুরু করেছেন। রাজশাহী-১ গোদাগাড়ী-তানোরের সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এখন কোথায় আছে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আওয়ামীলীগ দলের কেউ কেউ বলেন ফারুক চৌধুরী আর্মী সেনানিবাসে আছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ৫ আগষ্ট নৌকা যোগে পালানোর সময় এলাকাবাসীর হাতে ধরা খেয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট করে পদ্মার ওপারে পাঠিয়ে দেয়। জানা যাচ্ছে তিনিও দেশেই আছে। তার জিসান টাইল এর দোকানঘরটি সেদিনই জনতা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানে বেলাল উদ্দীন সোহেল অভ্যুত্থানের পর তিনি দুইদিন অফিস করেছেন এর পর আবার তিনি লাপাত্তা হয়েছেন বলে জানা যায়।
গোদাগাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও গোদাগাড়ী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অয়েজ উদ্দীন বিশ^াস ৫ আগষ্টের পর গা ঢাকা দিয়েছেন এখন পর্যন্ত তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কেউ কেউ বলছেন তিনি বাড়িতেই আছেন। বাড়ী থেকে বের হচ্ছেন না। ড্রেন নির্মাণ ও পৌর ট্যাক্সকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্তনেই।
গোদাগাড়ী উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ ঘটনার পর তিনিও অদৃশ্য হয়ে যান। কোথায় আছেন খোঁজ খবর নেই।
গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব, তিনিও অন্যান্যদের মত গা ঢাকা দিয়ে আছেন।
গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রবিউল আলম, পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে আছেন। সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল ইসলাম নাসিম কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ডাইংপাড়ায় তার গার্মেন্টস এর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে উঠাবসা করতে দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল সরকার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন মিলি তাদেরও কোন খোঁজ খবর নেই।
গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগ সভাপতি অধ্যাপক আকবর আলীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, গা ঢাকা দিয়ে আছেন। সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল্লাহ (ধান ব্যবসায়ী) ঢাকায় আছেন।
এছাড়াও দলের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ ছাত্রলীগের সভাপতি/ সম্পাদকদদেরও কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা যায় উপজেলার প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদরসার সভাপতি/সেক্রেটারীর পদগুলো আ’লীগের দখলে। হাট বাজার, রাস্তা ঘাট, অটো/ টেম্পুতে চাঁদা তুলেন আ’লীগের লোকেরা, বালুমহল, রেজিষ্ট্রি অফিস, ঘাট ইজারাসহ উচ্চ থেকে নিম্ন সকল স্থানে আওয়ামীলীগের লোক দ্বারা শাসিত।
উপজেলায় দলীয় কোন বিক্ষোভ/ সমাবেশ হলে এবং উক্ত সমাবেশে এমপি থাকলে অবশ্যই প্রতিটি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, গণশিক্ষার সকল শিক্ষককে বাধ্যতামূলক আসতে হবে। না আসলেই ঘটবে বিপত্তি। এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এ আসনটিতে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে তার একচ্ছত্র আধিপত্য চলত। দলের কোন নেতা তার কথামত না চললেও তার উপর চলত খড়গহস্ত। তার কথামত যেসব নেতা চলত তাদেরকে রাখা হত উচ্চমাকামে। আর যারা তার কথার বিরুদ্ধে চলত তাদেরকে ছুঁড়ে ফেলা হত অতল গহব্বরে। আর এসব কারণেই গোদাগাড়ী আ’লীগে সৃষ্টি হয় সেভেন স্টার। এছাড়াও অনেক বড় বড় নেতাকে ছুড়ে ফেলা হয় দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে।
গোদাগাড়ীর যেসব নেতা এতদিন লুটেপুটে খেয়েছে তাদের আজ কাওকেই দেখা যাচ্ছে না। সকলেই গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তবে সব নেতাই ফেসবুকে সক্রীয় আছেন।
অপর দিকে রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও গোদাগাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আলমগীর কবির তোতাকে দেখা যাচ্ছে না। গত ৫ আগষ্ট তার উপজেলা প্রেসক্লাবটি বিক্ষুদ্ধ জনতা আগুণ লাগিয়ে পুুড়িয়ে দেয়।