গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে প্রস্তাবিত রাজশাহী -কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেনটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত  রহনপুর- সিঙ্গাবাদ রুট দিয়ে চলাচলের দাবি জানিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার জনসাধারণ।এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম , ট্রেনটির প্রস্তাবক রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসেনর সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানকে একটি আবেদন দিয়েছে রহনপুর রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদ। এ প্রসঙ্গে রহনপুর রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল জানান,বর্তমানে বাংলাদেশ -ভারতের মধ্যে রহনপুর –  সিঙ্গাবাদ রুট দিয়ে মালবাহী ট্রেন চালু থাকলেও যাত্রীবাহী ট্রেন চালু নেই।
প্রায় ১০ বছর যাবত একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা।  রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ নওগাঁ ও নাটোর জেলার জনসাধারণ সুবিধার্থে গত ২২ জুন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গিয়ে এ অঞ্চলের প্রানের দাবী বাস্তবায়ন করেছেন।এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।তিনি আরও জানান,রাজশাহী থেকে রহনপুর -সিঙ্গাবাদ রুট দিয়ে কলকাতার দূরত্ব ৩০০-৪০০কিলোমিটার।এ রুট দিয়ে রাজশাহী থেকে  কলকাতা পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ৮ ঘন্টা লাগতে পারে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশ -ভারতের মধ্যে ২টি যাত্রীবাহী ট্রেন চালু রয়েছে। আমরা এ রুট দিয়ে চতুর্থ আন্ত:দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেনটি চলাচলের দাবি জানাচ্ছি।তিনি আরও জানান,সীমান্তবর্তী স্টেশন রহনপুরে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস সম্পন্ন হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার জনসাধারণের সুবিধা হবে।এখানে সেগুলো সম্পন্ন করতে রেলওয়ের যথেষ্ট জায়গা রয়েছে।
ইতিহাসবিদরা জানান,১৯০৯ সালে এ রুট দিয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার সাথে রেল যোগাযোগ চালু করে ব্রিটিশরা।একসময় ভারতের জাতির পিতা মহাআত্মা গান্ধীও এ পথ দিয়ে ঢাকা যাতয়াত করেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরও চালু ছিল  এরুটটি। তবে ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের  বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ২৫ বছর পর  ১৯৯০ সালে এরুট দিয়ে বাংলাদেশ -ভারত -নেপাল মালবাহী ট্রেন চলাচল চালু হয়।গত ১০ বছর যাবত এ রুট দিয়ে বাংলাদেশ -ভারত-নেপালের মধ্যে  একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা।এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী,  নওগাঁ ও নাটোর জেলার জনপ্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, এ রুট দিয়ে একটি  যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ একটি ডিও লেটার রেলমন্ত্রীর দেয়া হয়। গত ২২জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করায় তাকে আমি এ অঞ্চলের জনসাধারণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।  তিনি আরও জানান,আড়াই হাজার বছরের পুরনো  বানিজ্য কেন্দ্র রহনপুর   থেকে  পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার সিঙ্গাবাদ স্টেশনের দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। আর সেখান থেকে ওল্ড মালদহ স্টেশনের দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার।ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এ স্টেশন থেকে সমগ্র ভারত রেলপথে যাতয়াত করা যায়। এছাড়া এ রুট দিয়ে ভবিষ্যতে  নেপালের সাথেও রেল যোগাযোগ চালুর সুযোগ  রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদবাদ জেলার বাসিন্দাদের সাথে আত্নিক সম্পর্ক রয়েছে।  এরুট দিয়ে  রাজশাহী – কলকাতা প্রস্তাবিত যাত্রীবাহী ট্রেনটি চলাচলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি ।